অনেকে USA তে পড়াশোনা করতে যাওয়ার জন্য আগ্রহী কিন্তু কিভাবে কি করবে বা প্রোসেসিং এর বিষয়ে জানতে এইদিক সেইদিক ঘোরাঘুরি করে। আশা করছি এই পোস্টটি তাদের জন্য অনেক উপকারী হবে A-Z প্রসেসিং সম্পর্কে জানতে।প্রসেসিং সম্পর্কে জানার আগে বলে নেই যে বা যারা স্টুডেন্ট হিসেবে আবেদন করতে চায় USA তে ভিসার জন্য সেই ভিসার টাইপ হচ্ছে F-1 Student/Exchange Visitor বলা হয়ে থাকে। আর কোনো F-1 এপ্লিকেন্ট যদি চায় তার Spouse/Child তাদের সাথে নিয়ে আবেদন করতে তাহলে তাদের ক্যাটেগরি হবে F-2 Dependent। F-1 এবং F-2 চাইলে এক সাথে ভিসা ইন্টারভিউ এর জন্য এম্বাসি ফেইস করতে পারে অথবা F-1 আগে এম্বাসি ফেইস করে ভিসা পাওয়ার পর F-2 কে দাঁড় করাতে পারে ইটস যার যার ইচ্ছা। তবে অভিজ্ঞতা থেকে বলছি আলাদা দাঁড়ানোই বেটার।
এখন আসি প্রসেসিং এর প্রসংগে:
১. USA তে মূলত তিনটি Intake থাকে সব থেকে বড়ো ইনটেক হচ্ছে Fall যেটির ক্লাস শুরু হয়ে থাকে আগস্ট থেকে ,অনেক ইউনিভার্সিটি তে সেটি October পর্যন্ত যেয়ে থাকে। এরপর আসে Spring যেটি ক্লাস জানুয়ারি থেকে শুরু হয় কিছু কিছু ইউনিভার্সিটি তে ফেব্রুয়ারিতে লেইট Spring ও থাকে। আর তার পর কিছু কিছু ইউনিভার্সিটি তে থাকে Summer ইনটেক যেখানে কম এপ্লিকেন্ট আবেদন করে থাকে। সব থেকে বেশি আবেদন Fall আর Spring এই করে স্টুডেন্টরা।
২. USA তে সবার আগে স্টেট আর ইউনিভার্সিটি সিলেক্ট করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজ। কোথায় থাকলে বা কোন ইউনিভার্সিটি তে পড়াশোনা করে আপনি আপনার ভবিষ্যতের জন্য উপকারী হবে সেটি ভেবে চয়েজ করা উচিত সময় নিয়ে। প্লাজ জব অপারচুনিটি এর বিষয়টাতো আছেই।
৩. বিগত বছর গুলোতে যেহেতু অনেক ভিসা হচ্ছে তাই অনেক স্টুডেন্ট আবেদন করছে তাই ভিসা এপয়েন্টমেন্ট এর জটিলতা আছে তাই বেস্ট হচ্ছে Intake এর ক্লাস শুরুর মোটামোটি ৬ মাস আগে এপ্লাই করা।
৪. USA এর ইউনিভার্সিটি গুলোতে এপ্লিকেশন ফি $25-70 ডলার বা তার বেশি হয়ে থাকে। কিছু কিছু ইউনিভার্সিটি তে এপ্লিকেশন ফি ওয়েইভ দিয়ে থাকে যার জন্য এপ্লিকেশন ফি লাগে না।
৫. এখন বর্তমান পরিস্থিতি অনুযায়ী ইউনিভার্সিটি গুলোতে ইংলিশ রিকোয়ারমেন্ট ফুল করার জন্য IELTS, Duolingo বা MOI দিয়েও আবেদন করা যাচ্ছে ইংলিশ প্রোফিশিয়েন্সি হিসেবে।
৬. আপনি যদি আপনার পছন্দের ইউনিভার্সিটি এবং সাব্জেট খুঁজে পান তারপর তাদের রিকোয়ারমেন্ট অনুযায়ী আবেদন করবেন। সেক্ষেত্রে যা যা ডকুমেন্টস লাগে পাসপোর্ট, ছবি, লাস্ট এডুকেশনাল সার্টফিকেট, ট্রান্সক্রিপ্ট, ২-৩ টা রিকোমেন্ডেশন লেটার, জব এক্সপিরিয়েন্স থাকলে সেটা। ( ইউনিভার্সিটি ভেদে আরও কিছু ডকুমেন্টস চাইতে পারে)
৭. আবেদনের পর মোটামোটি দেড় থেকে ২ মাস সময় লাগে Letter of Acceptance পেতে। সেটি পাওয়ার পর ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্ট এর কাছ থেকে Financial ডকুমেন্টস যেমন ব্যাংক স্টেটমেন্ট অথবা ব্যাংক সলভেন্সি সার্টিফিকেট চেয়ে থাকে। ব্যাংক স্টেটমেন্ট অবশ্যই পূর্ব এর তিন মাস এর ট্রানজেকশন থাকতে হবে। এমন না যে একদিন আগে একাউন্ট খুলে টাকা ডিপোজিট করেই স্টেটমেন্ট তুলে ফেললেন যেটি সাবমিট করার সাধারনত ১ সপ্তাহের ভিতরে i-20 দিয়ে থাকে। যেটির মধ্যে আপনার মেজর Sevis নাম্বার সব কিছু উল্লেক থাকে ইভেন স্কলারশিপ পেলে সেটাও।
৮. i-20 পাওয়ার পর প্রথম কাজ হচ্ছে যতো দ্রুত সম্ভব এম্বাসি ফি পে করা কারন আপনি যতো দ্রুত সেটি করবেন ততো দ্রুতই আপনি আপনার এপয়েন্টমেন্ট এর ডেট নেয়ার কাজটি শুরু করতে পারবেন আর এম্বাসি ফি হচ্ছে $160 ডলার।
৯. এম্বাসি ফি দেওয়ার পর আপনি যদি আপনার পছন্দের ডেইট যেটি কিনা ক্লাস শুরুর আগের তাহলে তো ভালোই আর যদি দূরের কোনো ডেইট পান নিউএ নিবেন। পরে সেটি রিসিডিউল করার সুযোগ আছে।
১০. এম্বাসি এপয়েন্টমেন্ট ডেইট এর মোটা মোটি ১০ দিন আগে i-20 তে উল্লেখ করা সেভিস নাম্বার এর উপর $350 ডলার পে করতে হয়। এইটা চাইলে i-20 পাওয়ার পরপরই পে করতে পারেন কিন্তু এপয়েন্টমেন্ট এর ১০ দিন আগ দিয়ে দেওয়া ভালো। আর সেটির মেয়াদ ১২ মাস থাকে।
১১. ইন্টারভিউ এর ৭ দিন আগে অবশ্যই DS-160 ফাইনাল সাবমিশন করে সেটির নাম্বার CGI portal এ আপডেট করতে হত। ভিসা অনেকটা ডিপেন্ড করে DS-160 তে দেওয়া তথ্য এর উপর তাই অবশ্যই নিজে যদি এক্সপার্ট হন করেন নয়তোবা এক্সপার্ট কারাওও সাহায্যে নিবেন। আর ইন্টারভিউ এর আগে সেটি রভিউ হয় এম্বাসি দ্বারা।
১২. ইন্টারভিউ এর আগে থেকেই ভালোমতো প্রিপারেশন নিবেন এবং ক্লিয়ার ধারনা রাখবেন যা বলবেন এবং DS-160 তে দেওয়া তথ্য অবশ্যই ক্লিয়ার ধারনা রাখবেন। ( প্রিপারেশন কি কি বিষয়ে নিতে হয় সেটি আরেকদিন সময় করে বলবো)
১৩. হাতে সময় নিয়ে আগে আগেই এম্বাসিতে পৌছে যাবেন কারন ঢাকা শহর এর জ্যাম আর আবহাওয়া এর ঠিক ঠিকানা নাই।
১৪. অবশ্যই এম্বাসি তে খুব ভালো মতো ডেসিং হয়ে যাবেন( টিকটকার হয়ে না)। কারন হিন্দিতে একটা কথা আছে Jo Dikta hay wo bikta hay মানে যেটা দেখতে ভালো সেটা ভালো বিক্রি হয়।
১৫. যা যা ডকুমেন্টস নিবেন: পাসপোর্ট, ছবি, Sevis Payment Confirmation, DS-160 Confirmation Page, Appointment Confirmation Page, সকল এডুকেশনাল ডকুমেন্টস- জব এবং এক্সট্রা কারিকুলাম সার্টিফিকেট যা আছে নিবেন, ইংলিশ প্রোফিসিয়েন্সি সার্টিফিকেট নিবেন, i-20, এডমিশন লেটার, স্পন্সর এর যব থাকলে সেটার ডকুমেন্টস এবং ব্যাবসা থাকলে ব্যাবসায়ীক সকল কাগজ নিবেন, ব্যাংক সলভেন্সি নিবেন আর ব্যাংক স্টেটমেন্ট মিনিমাম ৩-৬ মাসের ট্রানজেকশন এর স্টেটমেন্ট নিবেন।
লেখা ©Md Shahadat Hossain