Higher Study Preparation

উচ্চশিক্ষায় সিজিপিএ বনাম জিআরই

গ্রাজুয়েশন শেষে যারা উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে যেতে ইচ্ছুক তাদের জন্য CGPA এবং GRE( সকলক্ষেত্রে নয়) অন্যতম দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তাই উচ্চশিক্ষার প্রস্তুতিপর্বে এই দুটি বিষয় সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা থাকা অতীব জরুরী। যেহেতু দুটিই খুব গুরুত্বপূর্ণ তাই ব্যাপার দুটি নিয়ে আলোচনাও হয় অন্তহীন। সাথে সৃষ্টি হয় অনেক রুপকথা, উপকথা, সত্যকথা ও মিথ্যাকথা যার ভিড়ে আসল কথা টা অধিকাংশ সময় ই চাপা পড়ে থাকে। আর সেকারনেই নিজের অভিজ্ঞতা থেকে পরিস্থিতির বিচারে কিছু কথা লিখতে উদ্যত হলাম।

প্রথমেই, আমি যেটা স্মরণ করিয়ে দিতে চাই সেটা হল, উচ্চশিক্ষার জন্য GRE বাধ্যতামূলক নয় কিন্তু ভাল CGPA র গুরুত্ব সবখানেই অনেক বেশি। USA র অধিকাংশ এবং Canada র কিছু কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে গ্রাড স্কুলে ভর্তির ক্ষেত্রে CGPA র পাশাপাশি GRE অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটা ফ্যাক্টর। অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যাই বিশ্ববিদ্যালয়গুলো CGPA অপেক্ষা GRE স্কোরকেই বেশি প্রাধান্য দিয়ে থাকে। আর এটার অর্থ এই নয় যে বিষয়ভিত্তিক পড়ালেখার দরকার নেই বা ভাল CGPA র গুরুত্ব নেই। আমেরিকার বিশ্ববিদ্যালয় গুলো খুব ভালো করেই জানে বিশ্বের সব জাইগাই মারকিং এবং গ্রেডিং পদ্ধতি একরকম নয়। তাই অনেক সময় CGPA দিয়ে প্রকৃত মেধা যাচাই করা সম্ভব নয়। আর সেকারনেই GRE স্কোরের উপর তাদের ভরসা অনেক বেশি। GRE এতটাই স্ট্যান্ডার্ড একটা পরীক্ষা যেখানে দুটি ভিন্ন প্রশ্নে ( ETS Powerprep-2 and real exam) পরীক্ষা দিলেও দেখা যাই অধিকাংশ ক্ষেত্রে প্রাপ্ত মার্কের ভেরিয়েশন শতকরা ১ ভাগেরও কম হয় , যেখানে একই প্রশ্নে একই স্টুডেন্টর লেখা খাতা যদি আমার ডিপার্টমেন্টের দু’জন শিক্ষক মুল্যায়ন করেন তাহলে ২০% র বেশি ভেরিয়েশন খুব কমন!!!

এখন যদি কেউ মনে করে ভালো GRE স্কোর করেই যদি ভর্তি পর্ব উৎরানো যাই তাহলে এতো কষ্ট করে ক্লাস করা, আমাদের দেশের সেকেলে সব ল্যাব এক্সপেরিমেন্ট, বোরিং সব পড়ালেখা করা কি দরকার তবে সেটা হবে নিতান্তই আত্মঘাতী সিদ্ধান্তমুলক। কারন, মনে রাখা প্রয়োজন বিদেশে ভালো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারাটাই শেষ কথা নয়। সেখানে যেয়েও সর্বশেষ পড়ালেখাই করতে হবে। পড়াশোনার খরচ যোগাতে কাজ করতে হবে কোনো ল্যাব সহকারী অথবা টিচারের সহকারী হিসাবে। আমার দেখা অনেক সিনিয়র বড় ভাই ই আছে যারা ডিপার্টমেন্টের পড়ালেখা পর্যাপ্ত না করে সুধু GRE স্কোরের বলে ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েও ভালো রেজাল্ট তো দুরের কথা পাস করতেই হিমশিম খেয়েছেন। আমরা আমাদের স্বল্প দৃষ্টি দিয়ে সুধু ভর্তি পর্যন্তই দেখতে পাই কিন্তু প্রায়শই ভুলে যাই তার পরেও কিছু একটা আছে!!!

আমাদের অধিকাংশের ভিতর একটা বৈশিষ্ট্য খুবই প্রকট সেটা হল আত্ব সমালোচনাতে আমরা একেবারেই অজ্ঞ কিন্তু অন্যের সমালোচনাতে খুব পটু। নিজের ঘরের চালে খড় নেই ্তাতে নেই মাথা ব্যাথা অন্যের ঘরের চালে কাক বসলেও আমরা সে আলোচনাতেও মহা ব্যাস্ত হয়ে পড়ি। যাক সে কথা, আরেকটা জাতীও ব্যাধি সেটা হল কথায় কথায় নিজেকে অন্যের সাথে তুলনা করা এবং নিজের অযোগ্যতাকে একটা বিশেষ গুণ হিসেবে প্রমাণ করার প্রচেষ্টা। হতে পারে একটা মানুষের CGPA খারাপ কিন্তু এমনও তো হতে পারে যে বিষয়ে সে খারাপ রেজাল্ট করেছে ওই বিষয়ে তার কনসেপ্ট অনেক ভালো অথবা এক বিষয়ে রেজাল্ট খারাপ করলেও বিশেষ কোন সাবজেক্ট এ সে ভাল করেছে। কিন্তু আমরা প্রায়শই বলে থাকি অমুক তমুক এই এই বিষয়ে খারাপ করেছে তারপরও সে সফল হয়েছে, আমিও একই বিষয় গুলতে খারাপ করেছি মানে আমিও সফল হব। আসলেই কি ব্যাপার তাই? এমনতো হতে পারে, যেটাই অধিকাংশ ক্ষেত্রে হয়, যে ব্যাক্তি অই নির্দিষ্টক্ষেত্রে সফল হয়েছে সে ঐখানেই বেশি সময় দেবার কারনে হয়ত অন্য কিছু ক্ষেত্রে খারাপ করতেও পারে তাই বলে তো সে তুলনা দিয়ে আত্মতুষ্টিতে ভোগা এবং নিজের কাজে অবহেলা করা নেহাতই নির্বুদ্ধিতা ছাড়া কিছু নয়।

©️Md Torikul Islam

Shares:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *